মানছুর হাল্লাজ কি আল্লাহর ওলী ছিলেন???
লিখেছেন লিখেছেন সচেতন মুসলিম ০১ জুন, ২০১৪, ০৫:৪১:১৪ বিকাল
আমরা অনেকেই জানি যে হোসায়েন মানছুর হাল্লাজ একজন বিক্ষাত বুজুর্গ তথা আল্লাহর ওলী ছিলেন। আবার অনেকেই তাকে অস্বীকার করেন। তাহলে বাস্তবতা কি??? সেটাই আমি উপস্থান করতে চেষ্টা করব ইনশে আল্লাহ। প্রথমে আমি বাংলাদেশের
সবচেয়ে হক্কানী চরমুনাইর মরহুম পীর সৈয়দ মোহাম্মদ এছহাক সাহেবের আশেক মাশুক কেতাব থেকে উদ্বৃতী করছি। তিনি তার ঐ কেতাবের ৪১ পৃষ্ঠায় লিখেছেন-
মানছুর হাল্লাজ যখন এস্কের জোশে দেওয়ানা হইতেন তখন শের পড়িতেন- ওগো আমার মা’শুক মাওলা ! আপনি আপন কুদরতী নজরে আমার দিকে চাহিয়া দেখুন । আমি এখন আমি নাই । আমি আপনি হইয়াছি আর আপনি আমি হইয়াছেন । আমি হইয়াছি তন্, আর আপনি হইয়াছেন জান । আমি শরীর আপনি প্রাণ । এর পর
আর কেহ বলিতে পারেনা যে, আমি একজন আপনি আর একজন ।
বরং আমি ও আপনি এক হইয়া গিয়াছি, অর্থাৎ আমি আপনার জামালের খুশীর মধ্যে ডুবিয়া গিয়াছি, আমার অজুদ ফানা হইয়া গিয়াছে এবং আমার রুহ আপনার নূরের সাথে মিশিয়া গিয়াছে । আমার আমিও যখন লয় হইয়া গিয়াছে, তখন আমি আর কোথায় আছি ? আমি নাই । আপনি ছিলেন , আপনি আছেন , আপনিই
থাকবেন । আপনিতো আপনি, আমিও আপনি । আমি বলতে আর কিছুই নাই । আপনিই প্রথম , আপনিই শেষ, আপনিই প্রকাশ্য, আপনিই গোপন এবং আপনিই সকলের খবর জানেন । মনছুর হাল্লাজ এরূপ আল্লাহ পাকের মোরাকাবা করিতে করিতে আল্লাহর
নূরের মধ্যে গরক হইয়া হঠাত্ একদিন বলিতে লাগিলেন আনাল হক (আমি খোদা) । “নাউযুবিল্লাহ” বন্ধুরা আমি মনেকরি শুধু মাত্র এই একটি শব্দেই (আনাল হক) তার আসল পরিচয় প্রকাশ পায়। এবং যারা দ্বীনের ব্যারে অল্পই জানা তারাও তার (মানছুরের) ব্যাপারে বুঝতে পারবে। এবং এই কথাটি তার সমস্ত কুফুরী আক্বীদার অকাট্য প্রমাণ। তাকে আনাল হক বলতে নিষেধ করা হলেও তিনি তা ত্যাগ করেন নি। তার ইমান চলে যাওয়া এমনকি কাফের হয়ে যাওয়ার কথাও বলা হল তবুও তিনি আনাল হক বলা ত্যাগ করেন নি। পরবর্তীতে ধার্মিক বাদশাহ তাকেকে বন্দি করেন।
এবং বাগদাদের সমস্ত আলেমদের ঐক্যমতে তাকে হত্যা করা হয়।
তার পরিচয়ঃ তিনি ছিলেন একজন যাদুকর। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছুারাত ধরা ছিল তার কাজ। কখনো সুফীদের পোশাক পড়ে সুফী বনে যেতেন। আবার কখনো রাজা বাদশাহদের অথবা সৈনিকদের
পোশাক পরে রুপ পাল্টাতেন। আবার কখনো সাধারণ মানুষের ছুরত ধরে গা ঢাকা দিতেন। যেমন আমাদের এরশাদ চাচা নিজের অভ্যন্তরীণ রুপটা ক্ষণে ক্ষণে বদলান- তেমনি মানছুর তার বাহ্যিক রুপ ক্ষণে ক্ষণে বদলাতেন। তিনি স্রষ্টা এবং সৃষ্টির মধ্যে কোন পার্থক্য করতেন না। ততকালীন আলেম- ওলামাদের দৃষ্টিভঙ্গীঃ আলেম ওলামাগনের দৃষ্টতে তিনি যাদুকর ধোকাবাজ এবং কাফের ছিলেন। এমনকি ততকালীন অন্যান্য সুফীরাও তার কুফরীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি মক্কা সহ কমপক্ষে ৫০ টি
দেশ থেকে বিতাড়িত হন। তার বুজুর্গীঃ
>> তিনি দিনে রাতে ৪০০ রা কাআত নফল নামাজ পড়তেন- যা তিনি নিজের জন্য ফরয করে নেন।
>> দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ তিনি একই পোশাক পরতেন। একবার কিছু লোক জোর করে তা খুলে নেয়। তখন দেখা যায় তার ভিতরে জমে আছে অসংখ্য উকুন। তার কোন কোনটির ওজন ৩ রতি। এবং তার শরীরে একটি বিচ্ছুও দেখা যায় যা ১২ বছর যাবৎ তার শরীরেই ছিল। -তাযকিরাতুল আউলিয়া। তাহলে এখন আপনারাই বুজুন ওনি কত্তো বড় মাপের বুঝরোগ। বর্তমানে আমাদের দেশে ঢাকা শহরেও কিন্তু এই জাতীয় বুঝরোগ দেখা যায় – যাদের ২০ গজ দুরে থাকলেও দুরগন্ধে নাক বন্ধ করতে হয়। যাদের চুল জটলা পাকিয়ে ভাপসা হয়ে গেছে। যাদের দাড়ি- গোফের ভীরে মুখ খুজে পাওয়া ভার। যাদের নাভির নিচোর লোম হাটু পর্যন্ত ঠেকেছে এবং তা প্রকাশ্যে দেখাও যাচ্ছে। আর কিছু লোক তার পিছু নিয়েছে – তিনি নাকি আল্লাহর ওলী! ভাবতেই অবাক লাগে বর্তমানে কিছু কথিত আলেম ভন্ড (পীর) দের মত দাজ্জাল মানছুর হাল্লাজের পক্ষ নেয়।
বিষয়: বিবিধ
৬৩১৪ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সে হিসেবে আল্লাহর ওলী মানে আল্লাহর বন্ধু।
তিনি যদি আল্লাহর ওলী হন তাহলে তিনি আল্লাহর মেহমান দারীতে আছেন। এটা নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উম্মতদের পেরেশান হবার কিছুই নাই আবার আল্হাদিত হবার কিছু নাই।
আমাদেরকে শিক্ষা নিতে হবে সরাসরি কোরআন ও হাদিস থেকে। যেভাবে সাহাবীরা নিয়েছেন। কোরআন হাদিসে যা আছে তা জান প্রান দিয়ে মানব। যা নাই, তা মানার ক্ষেত্রে সঠিক ওজনে যাচাই বাছাই করব।
এই ওজনে মাপার জন্য মনছুর হাল্লাজের কোন উপদেশ বানীর দরকার নাই। তবে আমাদের দেশে কিছু পীর এসব কাহিনীকে রস মাখাইয়া সাধারন মানুষের মাথায় গোল লাগান, যাতে সাধারণ মানুষও এসব পীরের বিদঘুটে খাসিয়ত দেখে হতাশ না হয়। পাগল মার্কা হইলেও মনসুর আল্লাহর ওলী ছিলেন সুতরাং পীর সাহেব ছাগল মার্কা হইলেও আল্লাহর ওলী হতে পারেন। সুতরাং পীরের সাথে বেয়াদবী, তামাশা, মস্করা চলবেনা।
এটা পড়ুন- একটি মিথ্যাচারের জবাব
হাল্লাজ ছিল শয়তানের অলী।
মন্তব্য করতে লগইন করুন